
প্রকাশিত: Fri, Jan 6, 2023 4:21 PM আপডেট: Sun, May 11, 2025 11:10 AM
দুই রাত, একদিনের যুদ্ধবিরতি ইউক্রেনে এবং যুদ্ধের ভবিষ্যৎ
মনজরুল হক
মি. পুতিন ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছেন। এই খবরটি প্রচার পরপরই বিশ্ব মিডিয়ায় দু’ধরনের ইমেজ শো করা শুরু হয়েছে। পশ্চিমা মিডিয়া একে দু’দিন আগের ব্যাকফায়ার হিসাবে প্রচার করছে। প্রসঙ্গত দুদিন আগে ডোনেৎস্কের নতুন কোয়ার্টারে পিস-টাইম বিশ্রামে ছিলো রাশিয়ান সৈন্যরা। সেখানেই ইউক্রেন রকেট হামলা করে এবং অপ্রস্তুত অবস্থায় ৬৩ জন রাশিয়ান সেনার মৃত্যু হয়। এর কাউন্টার রি-অ্যাকশন হিসাবে রাশিয়া বাখমুতের কাছে একটি আইস স্কেটিং এরেনায় ইউক্রেন সেনাদের ব্যারাকে নিখুঁত রকেট হামলা চালিয়ে ১২০ জন ইউক্রেন সেনা হত্যা করেছে এবং রুজকোভা রেলস্টেশনকে ব্যারাক হিসাবে ব্যবহার করা ইউক্রেনীয় অবস্থানে রকেট হামলা চালিয়ে ৭০ জন বিদেশি ভাড়াটে সেনাসহ ১৩০জন সেনা, ২টি হাইমার্স লাঞ্চিং যুদ্ধযান, ৮টি হাইমার্স রকেট, ৪টি চেক ভ্যাম্পায়ার রকেট লাঞ্চারসহ প্রায় ২০০ গখজঝ এবং ৬টি সেনাবাহী যুদ্ধযান ধ্বংস করেছে।
এর পর পরই পুতিনের যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে পশ্চিমারা এবং বঙ্গচ্যানেলসমূহ পুতিনের ‘পশ্চাৎপসারণ’ বলে চাউর করছে। অন্যদিকে মোটামুটি নিরপেক্ষ সংবাদ মাধ্যমে পুতিনের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানানো হয়েছে। খ্রিস্টীয় ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ উপলক্ষ্যে সাধারণ মানুষকে ধর্ম পালনের সুযোগ দেওয়ার এই ঘোষণাকে বিভিন্ন ধর্মযাজকরাও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন এক ঘোষণায় রাশিয়ার সামরিক বাহিনীকে ইউক্রেনে সাময়ীক অপারেশন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে রাশিয়ান অর্থোডক্স চার্চের প্রাইমেট প্যাট্রিয়ার্ক কিরিল ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতে উভয় পক্ষকে অর্থোডক্স ক্রিসমাস ছুটির সময় হিংসা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ক্রেমলিনের ঘোষণা মতে, যুদ্ধবিরতি শুরু হবে স্থানীয় সময় শুক্রবার ৬ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে ৭ জানুয়ারি শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত। ক্রেমলিনের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অর্থোডক্স ধর্ম পালন করে এমন অনেক নাগরিক যে বিরোধপূর্ণ এলাকায় বসবাস করে তা বিচার-বিবেচনা করে আমরা ইউক্রেনের পক্ষকে শত্রুতা বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়ার জন্য এবং তাদের ক্রিসমাসের আগের দিন এবং বড়দিনের দিনে অনুষ্টানাদিতে যোগ দেওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাই।’
যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদোমির জেলেনেস্কি রাশিয়ার এই ঘোষণাকে পশ্চিমাদের ট্যাবলেট গেলা মস্তিষ্ক দিয়ে রাশিয়ার ‘পরাজয়’ ধরে নিয়ে উল্লসিত হয়ে যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা সামান্য বিবেচনাবোধ থাকলে তিনি একে স্বাগত জানাতেন। অন্তত এই দুদিন কোনো মানুষের রক্ত ঝরবে না জেনে স্বস্তি পাওয়ার বদলে জেলেনেস্কি ‘হাত্তি কাদায় পড়ছে। মার ইদুরটারে’ ভেবে পুলকিত হচ্ছেন। এর আগে পুতিন তার তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সাথে একটি ফোন কলে ইউক্রেনের সাথে শান্তি আলোচনার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। পুতিন পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন যে মস্কো কিয়েভের সাথে ‘গুরুতর সংলাপের জন্য উন্মুক্ত’ যদি তারা নতুন আঞ্চলিক বাস্তবতা স্বীকার করে নেয়। যদিও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ডিসেম্বরের শেষের দিকে বলেছিলেন, ‘ইউক্রেনের রাজনীতিবিদরা আলোচনা করতে অক্ষম, তাদের বেশির ভাগই নির্লজ্জ রুসোফোবে আক্রান্ত।’
রাশিয়ান অর্থোডক্স চার্চের প্রাইমেট, প্যাট্রিয়ার্ক কিরিল, রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয়ের বাহিনীকে ক্রিসমাসের আগে এবং চলাকালীন শত্রুতা বন্ধ করার আহ্বান জানানোর সময় বলেছিলেনÑ‘যুদ্ধবিরতির উদ্দেশ্য হবে অর্থোডক্স বিশ্বাসীদের বড়দিনের আগের দিন এবং ক্রিসমাসের দিনে আয়োজিত উৎসবগুলোতে যেন যোগদান করতে পারে। এরও আগে সাময়িক যুদ্ধ বন্ধের জন্য ১ হাজার মার্কিন খ্রিস্ট বিশ্বাসী নেতারা একই ধরনের আহ্বান জানিয়েছিল। তারা পরামর্শ দিয়েছিলেন ইউক্রেন এবং রাশিয়া উভয়ই ২৪ ডিসেম্বর থেকে ১৯ জানুয়ারির মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে পারে।
এই ৬ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে ৭ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির পর কী হবে? ফের যুদ্ধ শুরু হবে? নাকি স্থায়ী যুদ্ধবিরতী আসবে? বাস্তব অবস্থা বলছে; এই যুদ্ধবিরতীর পর পরই বড় ধরনের সংঘাত শুরু হতে যাচ্ছে। এই বিরতি কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠানের বিরতি নয়, বলা যেতে পারে রিফুয়েলিং মেথড। অর্থাৎ পিছিয়ে এসে নতুন করে ছক কেটে নতুন অপারেশন চালানো। বিপুল প্রাণহানির পরও সেই বাস্তবতাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। লেখক ও ফ্রিল্যান্স জার্নালিস্ট
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
